প্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধাঃ-
টেট পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। পর্ষদের ভুলের কারণে বয়স পেরিয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। তাই তার দায় পর্ষদকেই নিতে হলে বলে সোমবার টেট মামলার শুনানিতে জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । একইসঙ্গে সবাইকে ইন্টারভিউতে ডাকার নির্দেশ আদালতের।২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় ছয়টি ভুল প্রশ্নের কারণে পাশ করতে পারেনি বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী। পরে আদালত ভুল প্রশ্নের জন্য বাড়তি ৬ নম্বর করে চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় আদালত। সেই অতিরিক্ত নম্বরে বদলে যায় মেধাতালিকা। আগে ব্যর্থ বহু প্রার্থীই এই ছয় নম্বরের পর পাশ মার্ক পাওয়ায় টেট-এর শংসাপত্র পাওয়ার যোগ্য হন। একইসঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী এই টেট শংসাপত্রের ভিত্তিতে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন ওই প্রার্থীরা । কিন্তু ততদিনে বয়স পেরিয়ে টেট পাশের যোগ্যতা সত্ত্বেও তাদের ইন্টারভিউতে সুযোগ দিতে নারাজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ, পর্ষদের ভুলেই যখন দেরি, তখন সেই দায়ভার নিতে হবে পর্ষদকেই। তাই বয়স পেরলেও টেট পাশ সমস্ত প্রার্থীকে সুযোগ দিতে হবে ইন্টারভিউতে। তারা উত্তীর্ণ হলে তাদের নিয়োগ করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।একইসঙ্গে এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ''প্রাথমিক পর্ষদকে এখন লোকে দুর্নীতি আর বেআইনি কাজের জায়গা হিসেবে চেনেন, তারাই বঞ্চিত ব্যক্তিকে চাকরি দেবে।'' ২০১৬’র গাইডলাইন অনুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড মামলাকারীর ইন্টারভিউ নেওয়ার নির্দেশ আদালতের।উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে মামলাকারী (TET Case) নেফাউর শেখ টেট পরীক্ষায় অসফল হন। পরে পর্ষদের ছয় ভুল প্রশ্ন নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। অতিরিক্ত নম্বরের জোরে তিনি টেট উত্তীর্ণ হলেও নিয়োগের বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি। ফলে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। এরপরই সেই মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ আদালতের।প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটের পর ২০১৬-তে শুরু হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ওই সময়ে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। তবে সেই নিয়োগে পাহাড়-প্রমাণ দুর্নীতি ছিল বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। লাখ-লাখ টাকার বিনিময়ে ওই সময়ে বহু নিয়োগ হয়েছিল বলে দাবি চাকরিপ্রার্থীদের। চাকরির দাবিতে এর আগেও একাধিকবার পর্ষদের দ্বারস্থ হয়েছেন ২০১৪-এর TET উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড প্রার্থীরা। এর জেরে করুণাময়ীতে সম্প্রতি ধরনায়ও বসে চাকরিপ্রার্থীরা।